নিজস্ব প্রতিনিধি: বরকল উপজেলায় এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী) প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে। প্রতি বছর সরকার থেকে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে বরকল উপজেলায়। বছরের পর বছর অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে ফেলে রাখায় জনগনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে ? প্রতি বছর কেবল মুষ্ঠিমেয় বা কিছু কিছু প্রকল্প আংশিকভাবে বাস্তবায়ন করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রায় ৬০-৭০% ভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়না। যা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক তদন্ত করলে শতভাগ সত্যতা পাওয়া যাবে। প্রক্ল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) প্রকল্প, টেন্ডারের ও কোটেশন এর প্রকল্প সবগুলিরিই অবস্থা একই। বিগত কয়েকটি অর্থবছর অর্থাৎ ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ ও ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের প্রকল্প গুলির বাস্তবায়নের অবস্থার একটু খতিয়ে দেখলে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে কি এক নাজুক অবস্থা। দেখা যায় এই তিন অর্থ বছরের অনেক প্রকল্প এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার পিছনে নানা উজুহাত দেখানো হচ্ছে। নীরবে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য নির্দিষ্ট অর্থ বছরের মধ্যে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন না করে সেই টাকা গুলি প্রতি বছর জুন ফাইন্যালের সময় পে-অর্ডারের মাধ্যমে অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে একটি যৌথ ব্যাংক হিসাবে জমা রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী এ তিন জনের নামে খোলা হয়েছে একটি অবৈধ যৌথ একাউন্ট। ২০২১-২০২২ ও গেল অর্থ বছরের অনেকগুলি প্রকল্প যেমন- বরকল উপজেলা সদরে ৪টি কটেজ নির্মাণ, অজ্জ্যাংছড়িতে ফুট ব্রীজ নির্মাণ, আন্দারমানিক নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যাল সংস্কার, খুববাংবাজার শেড মেরামত ও গেল অর্থ বছর ২০২২-২০২৩ এ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক গৃহীত সুবলং ইউনিয়নে শিলছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিঁড়ি নির্মাণ, ভূষনছড়া ইউনিয়নে লতিবাঁশ ছড়া গ্রামে জিএফএস পাইপ লাইন মেরামত, বরকল ইউনিয়নে করল্যাছড়ি সেচ পাকা নালা সংস্কার ও বর্ধত করণ, বড়হরিনা ইউনিয়নে শ্রীনগর বাজারে যাত্রী ছাউনী সংস্কার ও তাগলগ ছড়ার উপর ফুট ব্রীজ সংস্কার এসসব প্রকল্প গুলি বাস্তবায়ন না করে ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন স্থানে অনেক প্রকল্প কাজ না করে ফেলে রাখা হয়েছে। এখানে সবচেয়ে ইন্টারেসিটং বিষয় হলো যেসব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে প্রকল্পের কাজ গুলি দেওয়া হয় সেসব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে প্রোপ্রিয়েটর বা মালিকরা জানেনও না যে তাদের লাইসেন্স এর নামে টেন্ডারের কাজ দেওয়া হয়েছে।
এখানে বড় ধরণের রহস্য থেকে যায় যে, কে বা কারা তাহলে ঐ সব লাইসেন্স ব্যবহার করে প্রকল্পের টাকা লুটপাট করছে। তবে এডিপি বরাদ্দের টাকা ভাগা-ভাগি, কে কত টাকার প্রকল্প পাবে, কাকে কয়টাকার প্রকল্প দেওয়া হবে এসব কিছু বরকল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু বিধান চাকমা করে থাকেন বলে সবাই তাঁর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন এবং প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন ও তাঁর উপর শতভাগ নির্ভর করে বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে এডিবির ও সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ করে কেউ বক্তব্য দিতে চাইনি।